• রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৪ অপরাহ্ন
  • |
  • |
Headline :
টাইফয়েড টিকাদানে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে “TCV Vaccination Campaign 2025” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত সরাইল ব্যাটালিয়ন ২৫ বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমান চোরাচালানী মালামাল এবং মাদকদ্রব্য আটক নীলফামারীতে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চলাচল নদী দখল-দূষণকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি নদীকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের গুইমারায় শিম চাষে ভিডিপি সদস্যদের ভাগ্যবদল ইলিশ কেনাবেচায় সরগরম চাঁদপুরের মাছঘাট ক্ষেতলালে করলা চাষে সফলতা, লাভ বাড়ছে কৃষকের পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শিশু শিক্ষার্থীসহ নিহত তিন “পাবনা সোসাইটি”-এর উদ্যোগে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির অঙ্গীকার পিরোজপুরে তাহসিন শিক্ষা পরিবারের আয়োজনে সবক প্রদান ও অভিভাবক সম্মেলন

কুমিল্লার নারীদের হাতে বানানো মোবাইল যাচ্ছে বিদেশে

স্পষ্টবাদী ডেস্ক / ২৯ Time View
Update : শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
কুমিল্লার নারীদের হাতে বানানো মোবাইল যাচ্ছে বিদেশে
কুমিল্লার নারীদের হাতে বানানো মোবাইল যাচ্ছে বিদেশে

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পিয়ারাতলীতে এখন প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে। গ্রামের অর্ধশিক্ষিত নারীরা হাতে বানাচ্ছেন মোবাইল ফোন— যা দেশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে বিদেশেও। তিন মাসের প্রশিক্ষণ পেয়ে তারা এখন দক্ষ কারিগর। গ্রামের প্রায় ২০০ নারী কাজ করছেন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান হালিমা টেলিকমে।

এ উদ্যোগের উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর। একসময় হোটেলে কাজ করতেন তিনি। পরে অল্প পুঁজি নিয়ে ঢাকায় মোবাইল রিচার্জ কার্ড বিক্রি শুরু করেন। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে ব্যবসার পথ খুঁজে পান।

এক পর্যায়ে কুমিল্লায় ফিরে গ্রামীণফোনের ডিলার হন। এরপর ২০১০ সালে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন হালিমা টেলিকম। সেই বছরই চীন সফর করে বাটন মোবাইলের যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে শুরু করেন মোবাইল তৈরি। প্রথম দিকে কিছু লোকসান হলেও পিছু হটেননি।

পরবর্তীতে প্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে ফের শুরু করেন উৎপাদন। ধীরে ধীরে তৈরি করতে থাকেন ব্যাটারি, চার্জারসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ। বাজারে “হালিমা” ব্র্যান্ডের সুনাম ছড়িয়ে পড়লে ব্যবসা গতিময় হয়ে ওঠে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পিয়ারাতলীর কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, নারীরা ব্যস্ত যন্ত্রাংশ জোড়া লাগাতে। কেউ এলসিডি, কী-প্যাড, ক্যামেরা বসাচ্ছেন, কেউ বা ব্যাক হাউজিং বা লেন্স সেট করছেন।

প্রায় ৩০টি ধাপ শেষে তৈরি হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ মোবাইল হ্যান্ডসেট, যা পরে পাঠানো হয় সংরক্ষণ ও রপ্তানির জন্য। কারখানার কর্মী শিউলি আক্তার ও ফারজানা বলেন, “প্রথমে কিছুই জানতাম না। তিন মাসের প্রশিক্ষণে এখন পুরো মোবাইল বানাতে পারি। অনেক সময় বাড়িতেও কাজ করি। গ্রামের অনেক নারী এখন এ কাজ জানে।”

হালিমা টেলিকমের সেলস অ্যাডমিন ওমর হাসান বলেন, “আগে এসব নারীরা কোনো কাজ জানতেন না। এখন নিজেরাই মোবাইল ফোন তৈরি করছেন এবং সংসারের আয় রোজগারে ভূমিকা রাখছেন। আমাদের চেয়ারম্যানের স্বপ্নই ছিল গ্রামীণ নারীদের প্রযুক্তিতে যুক্ত করা।”

হালিমা হাইটেক পার্কের প্রোডাকশন হেড মিজানুর রহমান জানান, “যন্ত্রাংশগুলো চীন থেকে আসে। ধাপে ধাপে প্রতিটি অংশ একে একে জোড়া লাগানো হয়, পরে পরীক্ষা শেষে প্যাকেটিং করা হয়। এসব মোবাইল দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।”

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর বলেন, “একসময় হোটেল বয়ের কাজ করতাম, এখন আমার পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১,৪০০ জন কাজ করছেন। তাদের ৯৫ শতাংশই নারী। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এখন দক্ষ কর্মী হয়ে উঠেছেন। নিজের আয় দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন, সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ছেন।”

পিয়ারাতলী এখন কুমিল্লার “মোবাইল তৈরির গ্রাম” নামে পরিচিত। এখানকার নারীরা প্রযুক্তির স্পর্শে বদলে দিয়েছেন নিজের জীবন, আর গ্রামটি হয়ে উঠেছে উন্নয়নের অনুপ্রেরণা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category