গত ১০ বছরে আমনের চাষ বেড়েছে ৩৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। উৎপাদন বেড়েছে ৬ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি। চলতি মৌসুমে রংপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমন ধানের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। উদ্বৃত্ত চাল দেশের অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছিল ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬১৩ হেক্টর জমিতে।
উৎপাদন হয়েছিল ১৪ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি। চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ লক্ষ ২০ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৬ লক্ষ ২১ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে। এসব জমি থেকে উৎপাদন হবে ২০ লক্ষ ১০ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন।
২০২৩ সালে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় আমন ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লক্ষ ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছিল ৬ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৬২ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ধরা হয় ৩ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি। প্রতি বছরই আমন ধানের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে বৃষ্টি-নির্ভর আমন ধানে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পাননি রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে সেচ দিয়ে চাষ করতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, আমনের চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা-মাড়াইয়ের আগে পর্যন্ত জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে।
আমন চাষে মৌসুমে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, এলাকায় সেই পরিমাণ বৃষ্টি হয়নি। এক বিঘা জমিতে প্রতি ঘণ্টায় ১২০/১৩০ টাকা করে ১৬ ঘণ্টা সেচ দিয়ে চারা রোপণ করেছেন। এতে বাড়তি খরচ পড়েছে ২ হাজার টাকার বেশি।
নীলফামারী সদর উপজেলার আমন চাষি আব্দুর রহমান বলেন, ২ একর জমিতে আমন চাষ করেছেন। ক্ষেতে পানি না থাকার কারণে প্রতি ঘণ্টায় ১২০ টাকা করে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়েছেন। কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, আমন ধান রংপুর অঞ্চলের কার্তিকের মঙ্গা দূর করেছে।
ফলে কার্তিক মাসেও কৃষকের মুখে হাসি থাকে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাঝে স্বস্তির ভাব দেখা গেছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে আমন ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষ হচ্ছে।