• সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন
  • |
  • |
Headline :
টাইফয়েড টিকাদানে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে “TCV Vaccination Campaign 2025” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত সরাইল ব্যাটালিয়ন ২৫ বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমান চোরাচালানী মালামাল এবং মাদকদ্রব্য আটক নীলফামারীতে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চলাচল নদী দখল-দূষণকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি নদীকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের গুইমারায় শিম চাষে ভিডিপি সদস্যদের ভাগ্যবদল ইলিশ কেনাবেচায় সরগরম চাঁদপুরের মাছঘাট ক্ষেতলালে করলা চাষে সফলতা, লাভ বাড়ছে কৃষকের পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শিশু শিক্ষার্থীসহ নিহত তিন “পাবনা সোসাইটি”-এর উদ্যোগে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির অঙ্গীকার পিরোজপুরে তাহসিন শিক্ষা পরিবারের আয়োজনে সবক প্রদান ও অভিভাবক সম্মেলন

বিদেশি ঋণে রেকর্ড, ছাড়ালো ১১২ বিলিয়ন ডলার

স্পষ্টবাদী ডেস্ক / ৫৭ Time View
Update : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বিদেশি ঋণে রেকর্ড, ছাড়ালো ১১২ বিলিয়ন ডলার
বিদেশি ঋণে রেকর্ড, ছাড়ালো ১১২ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ আবারও নতুন রেকর্ড গড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়িয়েছে ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে এই বিদেশি ঋণের পরিমাণ, যা অর্থনীতিবিদদের মধ্যে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অবকাঠামো প্রকল্প, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপে এই ঋণ বৃদ্ধিকে বড় একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান বৈদেশিক ঋণের মধ্যে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলারই বেড়েছে গত সাড়ে ১৫ বছরে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে। এই সময়ে সরকার আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ব্যাপক হারে ঋণ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে, বেসরকারি উদ্যোক্তারাও বিদেশি উৎস থেকে কম সুদের ঋণে ঝুঁকেছেন।

গত কয়েকবছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি থাকায় দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। বিদায়ী সরকারের সময়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি ঋণ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রিজার্ভের পতন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। প্রবাসী আয় বেড়েছে, পাশাপাশি বিদেশি ঋণের প্রবাহ চালু থাকায় ডলারের বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাস (অর্থবছর) শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিলো ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। এই অর্থ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত মার্চ মাসে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিলো ১০৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। সেই হিসেবে গত তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৭৩৬ কোটি ডলার। আর ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৮৪৩ কোটি ডলার; গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ছিলো ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনী

তিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের বিদেশি ঋণের বড় অংশ সরকারের এবং এই ঋণ মূলত বিভিন্ন অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নেওয়া হয়। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, অতীতে অনেক ঋণ অপচয়ে ব্যবহার হয়েছে, যা বন্ধ করতে হবে। ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে দেশের পরিশোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, জিডিপি অনুপাতে বিদেশি ঋণ এখনো সহনীয় মাত্রায় রয়েছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ঋণের সুদ এবং মূল অর্থ পরিশোধের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি যদিও স্বস্তিদায়ক, পরিশোধে যথেষ্ট চাপ এবং কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন পড়বে।

২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিলো ৪১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত ১০ বছরে এই ঋণ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণের মাইলফলক অতিক্রম করে।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ। সেই হিসেবে, মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬৩৮ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৭৭ হাজার ৪৩৩ টাকা। ১০ বছর আগে এই পরিমাণ ছিলো মাত্র ২৫৭ ডলারের কিছু বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে রয়েছে ৮২ শতাংশ, আর বেসরকারি খাতে রয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে সরকারি খাতের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৩৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিলো ৮ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার।

অর্থাৎ তিন মাসে সরকারি ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে, বেসরকারি খাতের ঋণ জুন শেষে ছিলো ১ হাজার ৯৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিল ১ হাজার ৯৮ কোটি ডলার—অর্থাৎ সেখানে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category