খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এর আগে ২৬ আগস্ট জেলার দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে রক্ষিত ১৩২ বস্তা খাওয়ার অনুপযোগী পচা চাল জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন। এই চাল কীভাবে গুদামে এলো তা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছেন তিনি। এরই মধ্যে বাগমারার গুদামগুলোতে পচা চাল রাখার খবর এলো। দুই উপজেলার খাদ্যগুদামে খাওয়ার অনুপযোগী বিপুল পরিমাণ পচা চাল জব্দের পর জেলার বাকি খাদ্যগুদামের মজুত চালের মান পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রকল্পের উপকারভোগীরা।
রাজশাহী জেলায় খাদ্য বিভাগের ১২টি গুদাম (এলএসডি) রয়েছে। এগুলোর অবস্থান রাজশাহী সদর, পবার নওহাটা, তানোর ও কামারগাঁও, ভবানীগঞ্জ, মোহনপুর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ীর রেলবাজার ও প্রেমতলীতে। এসব গুদাম থেকে খাদ্য বিক্রি ও বিতরণ কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে ৯৮ হাজার ১৬৬ জন উপকারভোগীর মাঝে চাল সরবরাহ করা হয়।
জানা যায়, বাগমারার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা এলাকায় উপকারভোগীদের মাঝে খাদ্য বিক্রি ও বিতরণ শুরু হয় আগস্টের শেষে। ওই উপজেলার ভবানীগঞ্জ সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে চাল তুলে দায়িত্বপ্রাপ্তরা দুস্থ মানুষদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি ও বিনামূল্যে বিতরণ করেন। এরই মধ্যে উপকারভোগীরা দেখতে পান তাদের দেওয়া অধিকাংশ চালই পচা, পোকা খাওয়া ও খাওয়ার অনুপযোগী। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সরাসরি গিয়ে অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের চারটি সংরক্ষণাগারে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে চারটি খাদ্যগুদামই সিলগালা করে দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির সুফলভোগীদের থেকে অভিযোগ পেয়ে ভবানীগঞ্জ সরকারি খাদ্যগুদামের চারটি সংরক্ষণাগারে অভিযান পরিচালনা করি। প্রতিটি সংরক্ষণাগারে খাওয়ার অনুপযোগী অতি নিম্নমানের বিপুল পরিমাণ পচা চাল পাওয়া গেছে। এসব চাল এতটাই নিম্নমানের যে কোনো পর্যায়েই মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত নয়। এই চাল মাছের ফিড বা পশুখাদ্য তৈরিতে ব্যবহার হয় বলে আমার মনে হয়েছে। রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়াই বলা যায় এসব চাল কতটা নিম্নমানের।