• বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন
  • |
  • |

সালাহউদ্দিন আহমেদ কার সর্বনাশ করেছেন— প্রশ্ন রনির

স্পষ্টবাদী ডেস্ক / ৪৩ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫
গোলাম মাওলা রনি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ কার কী সর্বনাশ করেছেন বলে প্রশ্ন করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে খুবই জনপ্রিয় ও পরিচিত একটি মুখ এবং বিএনপির রাজনীতির জন্য তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ শাসন আমলে যে জুলুমের শিকার হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এটা নজিরবিহীন ঘটনা।’

‘তার জীবনে যে দুর্ভোগ এবং দুর্দশা ঘটেছে; ক্ষমতাসীন একটি রাজনৈতিক দল কতটা নির্মম এবং নিষ্ঠুর হতে পারে সেটা সালাহউদ্দিনের গুম হয়ে যাওয়া এবং ভারতের মাটিতে তিনি যেভাবে ধরা পড়েছেন, যেভাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং যেভাবে তাকে দিনের পর দিন পাগলের চিকিৎসা করা হয়েছে একটা বদ্ধ উন্মাদ বানানোর জন্য, যেভাবে তাকে ভারতে আটকে রাখার জন্য স্থানীয় লোয়ার কোর্ট থেকে শুরু করে একেবারে হাইকোর্ট পর্যন্ত তাকে যেতে হয়েছে।

এটা নজিরবিহীন, এই ঘটনা কখনো ঘটেনি বাংলাদেশে। যখন তিনি সেখান থেকে মুক্ত হলেন তখন তাকে বাংলাদেশে আসার জন্য যে ট্রাভেল ডকুমেন্টের দরকার ছিল সেটা ভারত সরকারও তাকে দেয়নি এবং বাংলাদেশ সরকার তো তাকে দেয়ইনি। ফলে তিনি ভারতে যে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন ওটা একটা ট্র্যাজিক ইভেন্ট।’
‘সেখান থেকে বিএনপির রাজনীতিতে তার যতটুকু অবদান রাখা দরকার তিনি তা করেছেন, রেখেছেন।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে যতটা সংযোগ রাখা দরকার করেছেন এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের তিনি যে একজন মাস্টারমাইন্ড, এটি নাগরিক অধিকারের নুরুল হক নুর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন। এরপর শেখ হাসিনার পতনের পর তিনি বাংলাদেশে এলেন। বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করলেন এবং বিএনপিতে তার জয়জয়কার শুরু হয়ে গেল।’
‘কিন্তু সাম্প্রতিক সময় সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে এমন টানাটানি, সেই টানাটানির ফলে তার ইমেজ বলতে গেলে একেবারে শূন্যতে।

যেমন ধরুন আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের একটা ক্ষোভ এবং ক্রোধ আছে। সেটা হলো এস আলম গ্রুপের প্রতি। এস আলম গ্রুপকে বলা হতো যে তিনি শেখ রেহানার লোক এবং বাংলাদেশে যা কিছু করেছেন শেখ রেহানা তারেক সিদ্দিকী এই সিন্ডিকেটটা মূলত নেতৃত্ব দিতেন। তো সেই এস আলমের সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদকে ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমি সত্য-মিথ্যা কিছু জানি না।

‘যে কথাগুলো বলা হচ্ছে সেটা হলো— যে বাড়িতে তিনি ঢাকায় লুকিয়ে ছিলেন, যেখান থেকে তাকে গুম করা হয়েছিল, সেই বাড়িটা নাকি এস আলমের ছিল। তিনি ভারতের শিলংয়ে যে গেস্ট হাউসে ছিলেন, সেই গেস্ট হাউসের ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ, এটাও নাকি এস আলম দিয়েছেন। আবার তিনি বাংলাদেশে এসে যখন চট্টগ্রামে গেলেন, সেখানে এস আলমের গাড়িতে করে তিনি গেলেন। এ ছাড়া এস আলমের অফিসে তার ছেলে বসেন এবং এস আলমের যত ব্যবসা-বাণিজ্য সালাহউদ্দিন সাহেবের ছেলে দেখাশোনা ও তদারকি করেন। এরপর গুরুতর অভিযোগ হলো— তিনি বাংলাদেশে যা কিছু করছেন, সেটা হলো ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ডা। তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন এবং বিএনপির সর্বনাশ ঘটাচ্ছেন এবং বিএনপিকে একটা প্রো ইন্ডিয়ান দল হিসেবে, আওয়ামী লীগের একটা বিকল্প দল হিসেবে তৈরির চেষ্টা করছেন।’

‘আমার মনে হয়, বিএনপির ক্ষতি করার জন্যই সালাহউদ্দিন আহমেদকে এমন বিতর্কিত করা হচ্ছে। তাকে শেষ করে দেওয়া মানে বিএনপির নেতৃত্বকে শেষ করে দেওয়া। তাকে কালার করা মানে বিএনপিকে কালার করা। তিনি তারেক রহমান সাহেবের খুব ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। সালাহউদ্দিন সাহেব বিএনপিকে রিপ্রেজেন্ট করেন, তারেক রহমান সাহেবকে রিপ্রেজেন্ট করেন। ফলে তার এই ট্যাগের কারণে তিনি যেভাবে ফিনিশড হয়ে যাবেন, এর ফলে বিএনপি এবং তারেক রহমানও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমি মনে করি যে বিষয়টি নিয়ে বিএনপির যারা কেন্দ্রীয় কমান্ডে রয়েছেন, তারা নিজেদের মধ্যে একান্তে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করা উচিত এবং সে আলোচনায় যদি তারেক রহমান সাহেব বা অন্য সিনিয়র নেতারা সালাহউদ্দিন সাহেবের কোনো ত্রুটি দেখেন, সে কথাগুলো তাকে বলা উচিত। কিন্তু যদি সেটা না থাকে তাহলে তার পক্ষে দাঁড়ানো উচিত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category