• শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
  • |
  • |
Headline :
“পাবনা সোসাইটি”-এর উদ্যোগে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির অঙ্গীকার পিরোজপুরে তাহসিন শিক্ষা পরিবারের আয়োজনে সবক প্রদান ও অভিভাবক সম্মেলন পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার অঙ্গিকা শ্যামনগর পৌরসভার বর্জ্য অপসারণের জন্য ১ম বারের মতো যুক্ত হলো ভ্যান গাড়ি নীলফামারী ডিমলায় গণঅধিকার পরিষদের ৭ নেতাকর্মী জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন না হলে স্বীকৃতি বাতিল শেখ হাসিনার ১৫ বছরের সঙ্গে বর্তমান শাসনব্যবস্থার খুব বেশি পার্থক্য নেই : রুমিন ফারহানা ছবির জাদুকর পাবলো পিকাসোর জন্মদিন আজ পাবনার  ফরিদপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু শোক সংবাদ রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে চাহিদার ২০ ভাগ টিকিট পাচ্ছে না মানুষ

রংপুরে ৫ বছরে অকৃষি খাতে যুক্ত দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমি

রংপুর ব্যুরো / ২৯ Time View
Update : সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
রংপুরে ৫ বছরে অকৃষি খাতে যুক্ত দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমি
রংপুরে ৫ বছরে অকৃষি খাতে যুক্ত দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমি

রংপুরে আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে গত পাঁচ বছরে অকৃষি খাতে যুক্ত হয়েছে অন্তত দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমি। এর মধ্যে তিন ও চার ফসলি জমিও রয়েছে। এতে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কৃষি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায়, একসময় রংপুরের উদ্বৃত্ত ফসল দিয়ে দেশের অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটানো হতো। বর্তমানে যে ফসল উৎপাদন হয়, তা দিয়ে জেলার ৩২ লক্ষ মানুষের চাহিদা মিটলেও প্রতিবছরই কমে আসছে ফসলি জমির পরিমাণ।

অকৃষি খাতে চলে যাওয়া জমিগুলোতে গড়ে উঠছে আবাসন, শিল্প-কলকারখানাসহ বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠান। রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জ থেকে মডার্ন মোড়, রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের রংপুর থেকে কাউনিয়া, রংপুর-পীরগাছা সড়ক, রংপুর-বদরগঞ্জ সড়ক, রংপুর-দিনাজপুর সড়কের রংপুর থেকে তারাগঞ্জ এবং রংপুর-গঙ্গাচড়া সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে বাসাবাড়ি হোটেল-মোটেল, ফিলিং স্টেশন, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। এক সময়ের এসব জায়গায় ফসল চাষ হতো।

গঙ্গাচড়া উপজেলার খারুভাজ এলাকায় ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে অটো রাইস মিল। সম্প্রতি এলাকাবাসী পরিবেশ দূষণের অভিযোগ এনে মিলটির বিষয়ে প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জমির মালিক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, জমি আমার। কৃষিতে পোষায় না, অটো রাইস মিল দিচ্ছি। নিজেকে তো বাঁচতে হবে। তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, জমি অধিগ্রহণ করে রাস্তা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

রাস্তার পাশে তিন থেকে চার ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ছোট ছোট শিল্পকারখানাসহ বসতবাড়ি। এভাবে একের পর এক স্থাপনা গড়ে তোলায় আগামীতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের পীরজাবাদ এলাকার আনারুল ইসলাম বলেন, ১০-১৫ বছর আগেও এলাকায় কৃষিজমির পরিমাণ ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন রাস্তাঘাট, আবাসন, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে রংপুর জেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ছিল এক লক্ষ ৯১ হাজার ১০০ হেক্টর।

বর্তমানে জমির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে এক লক্ষ ৮৯ হাজার ৫১৪ হেক্টরে। পুরোপুরি পতিত না থাকলেও সাময়িক পতিত জমির পরিমাণ ২৮০ হেক্টর। তবে কৃষিজমি কমলেও খাদ্যশস্যের বহুমুখী উৎপাদন বেড়েছে। এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ না নিলে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে।

রংপুর জেলায় মোট জমির পরিমাণ দুই লক্ষ ৪০ হাজার ৬০ হেক্টর। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ৩১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৬১৫ জন। পাঁচ বছর আগে জনসংখ্যা ছিল ৩০ লক্ষ ৭২ হাজার ১০৬ জন। এখানকার মোট কৃষকের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ভূমিহীন। সামর্থ্যবান বা বিত্তশালী কৃষকের সংখ্যা একেবারেই কম। রংপুর জেলায় রয়েছে মাত্র ছয় হাজার বিত্তবান (বড়) কৃষক। রংপুরের বসতভিটা ও আবাদি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের নামে কৃষিজমি ধ্বংস হচ্ছে।

এ প্রবণতা আগামী প্রজন্মের জন্য অশনিসংকেত। তিনি আরও বলেন, রংপুর অঞ্চল কৃষিনির্ভর। এখানকার কৃষকের জীবনে প্রতিমুহূর্তে অনিশ্চয়তা থাকলেও তারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করে। অথচ কৃষিজমি নষ্ট করে একের পর এক স্থাপনা গড়ে উঠছে। এতে করে অচিরে রংপুর অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রংপুরে শতভাগ পতিত জমি নেই। বছরের কোনো না কোনো সময়ে সেগুলোতে ফসল চাষ করা হয়।

আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে রংপুরে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে না, বরং উদ্বৃত্ত থাকছে। ফসলি জমি যাতে অকৃষি খাতে ব্যবহার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এখানকার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর হওয়ায় কৃষিজমি রক্ষায় অগ্রাধিকার দিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ইটভাটাসহ কোনো প্রতিষ্ঠান পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু কৃষিজমিতে স্থাপনা গড়ে উঠার বিষয়টি দেখভাল করে কৃষি বিভাগ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category