পোল্যান্ডে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডানপন্থি ইতিহাসবিদ ক্যারল নাভরোকি। এই ফলাফল শুধু রাজনৈতিক পালাবদলের দিকেই ইঙ্গিত করছে না, বরং তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পোল্যান্ডের সম্পর্কেও নতুন প্রশ্ন তুলছে।
বিবার (১ জুন) রাতে ভোটগ্রহণ শেষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ফলাফলে দেখা যায়, নাভরোকি পেয়েছেন ৫০.৯ শতাংশ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী, ওয়ারশ শহরের উদারপন্থি মেয়র রাফাল ত্রাস্কোভস্কি পেয়েছেন ৪৯.১ শতাংশ। ফল ঘোষণার পর পোল্যান্ডের নির্বাচন কমিশন (পিকেডব্লিউ) নাভরোকিকে বিজয়ী ঘোষণা করে। ভোটের ব্যবধান এতটাই কম ছিল যে বুথফেরত জরিপেও উভয় প্রার্থীর মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছিল।
প্রাথমিক জরিপে ধারণা করা হয়েছিল ত্রাস্কোভস্কি সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। বিবিসি জানিয়েছে, বুথফেরত জরিপে তাকে ৫০.৩ শতাংশ ভোট পাওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছিল, যেখানে নাভরোকি পেয়েছিলেন ৪৯.৭ শতাংশ। সেই ফল দেখে ত্রাস্কোভস্কি আগেই নিজের বিজয়ের ঘোষণা দেন। তবে নাভরোকি তখনই জানিয়েছিলেন, “এখনও আশা ফুরায়নি।”
নাভরোকির এই জয় তার রাজনৈতিক সমর্থক, রক্ষণশীল বিরোধী দল ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস’ (PiS) দলের জন্য নতুন প্রাণসঞ্চার করে দিয়েছে। দেড় বছর আগে ক্ষমতা হারানো এই দলটি এখন থেকেই ২০২৭ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করতে পারে।
নাভরোকি কট্টর ক্যাথলিক মূল্যবোধ, রক্ষণশীল সামাজিক চিন্তাভাবনা এবং পোল্যান্ডের সার্বভৌমত্বকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। অনুমান করা হচ্ছে, তিনি আগের প্রেসিডেন্টের মতোই প্রধানমন্ত্রী ডনাল্ড টাস্কের ইউরোপপন্থি উদ্যোগগুলোতে বারবার ভেটো দেবেন।
নাভরোকির এই অবস্থান বিশেষ করে ইইউ-পন্থি জনমতের সঙ্গে সংঘাতে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তবে তার সমর্থকরা মনে করছেন, দেশের ঐতিহ্য ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই অবস্থান দরকার ছিল।