এই অনন্য প্রাণীটির নাম টারিটোপসিস ডোরনি (Turritopsis dohrnii), যাকে বিজ্ঞানীরা ডাকেন “ব্যাকওয়ার্ড এজিং জেলিফিশ” নামে। সাধারণত জেলিফিশের জীবন শুরু হয় পলিপ বা শৈশব অবস্থা থেকে, ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় পূর্ণবয়স্ক মেডুসা রূপে। অন্য প্রাণীর মতো বার্ধক্য ও মৃত্যুতে যাত্রা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু টারিটোপসিস ডোরনি বিপদের মুখে পড়লেই উল্টো পথে হাঁটে, অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক থেকে আবার শৈশব অবস্থায় ফিরে যায়!
এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ‘লাইফ সার্কেল রিভার্সাল’। এ সময়ে জেলিফিশের শরীরে ঘটে যায় এক আশ্চর্য পরিবর্তন ট্রান্সডিফারেন্সিয়েশন। এতে বিশেষায়িত কোষ তাদের প্রকৃতি বদলে নতুন ধরণের কোষে পরিণত হয় এবং শরীর ফিরে পায় নবজীবন। যেন এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হঠাৎ আবার শিশু হয়ে গেল!
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, এটিকে সম্পূর্ণ অমর ভাবা যাবে না। কারণ শিকারি প্রাণীর আক্রমণ, রোগ বা পরিবেশগত দুর্যোগে টারিটোপসিস ডোরনির মৃত্যু ঘটতে পারে। কিন্তু বয়সজনিত মৃত্যু থেকে এরা কার্যত মুক্ত। আর এ কারণেই একে ধরা হয় পৃথিবীর একমাত্র ‘অমর’ প্রাণী।
গবেষকরা মনে করছেন, এই রহস্য উদঘাটন করা গেলে মানুষের বার্ধক্য রোধ, কোষ পুনরুজ্জীবন কিংবা বয়স-সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধের নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। চিকিৎসা, জেনেটিক গবেষণা ও দীর্ঘায়ুর ভবিষ্যৎ বোঝার জন্য টারিটোপসিস ডোরনি এখন বিজ্ঞান জগতের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।