কোরবানির জন্য পাবনায় ছয় লাখের বেশি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদিও চাহিদা রয়েছে তিন লাখের বেশি। পশু উদ্বৃত্ত থাকলেও এ বছর ক্রেতা কম। খামারিরা বলছেন, বিভিন্ন জেলার বেপারিরা প্রতি বছর পশু কিনে নিয়ে যেতেন। তবে এবারের দৃশ্যপট ভিন্ন। জেলার পশুর হাটগুলোও প্রায় ক্রেতাশূন্য। এছাড়া পশু পালনে এবার খরচও বেশি হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজিও রয়েছে। সব মিলিয়ে এবার লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।
পাবনা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছর জেলায় গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ২০৪টি পশু কোরবানির উপযোগী করেছেন ২৭ হাজার ১০১ জন খামারি। এ বছর পশুর চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ১২ হাজার ৮২৬টি। সে হিসাবে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৮টি পশু উদ্বৃত্ত রয়ে যাচ্ছে।
খামারিদের দাবি, পশু উদ্বৃত্ত থাকলেও এবার ক্রেতা কম। যদিও দুই চারজন ব্যবসায়ী খামারে যাচ্ছেন, কিন্তু দাম বলছেন একদম কম। যে দাম বলছেন, সেটা তাদের পশুপালন খরচ থেকেও কম। প্রান্তিক খামারিদের অবস্থা আরো নাজুক। তাদের পশুর দামই বলছেন না বেপারিরা।
ছাতিয়ানী গ্রামের খামারি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কোরবানিদাতার সংখ্যা কমে গেছে। ফলে এ বছর পশুর দাম একেবারেই নেই বললেই চলে।’
পশু ব্যবসায়ী কালু সেখ জানান, প্রতি বছর পাবনা থেকে প্রচুর গরু কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেছি। চলতি বছর ট্রাক ভাড়া বেশি ও চাঁদা দিতে গিয়ে প্রতিটি পশুর ওপর ২০-২৫ হাজার টাকা বেশি পড়ছে।’
অবশ্য চাঁদাবাজির বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার মো. মোরতাজা আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পাবনা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একেএসএম মুশাররফ হোসেন বলেন, ‘জেলায় অর্ধেকের বেশি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। গত বছর থেকে এ বছর আরো প্রায় ১৪ হাজার পশু বেশি পালন করা হয়েছে। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি ও চাঁদাবাজির কারণে বেপারিরা পশু কিনতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এজন্য খামারিরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন। তবে যেসব খামারি প্রণোদনা পেয়েছেন, তারা কিছু হলেও লাভের মুখ দেখবেন।’