• বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ন
  • |
  • |
Headline :
পাবনার আটঘরিয়ায় সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার ১৭ বছরে ১৪তম সরকারের পতন দেখল নেপাল নেপালে আটকেপড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন, পরিস্থিতি শান্ত হলে ফিরবেন বালেন্দ্রর বদলে এখন সুশীলাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় নেপালের জেন-জি মুরাদনগরে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে হামলা, দুই শিক্ষকসহ আহত ১৫ কিশোরগঞ্জে “সন্ধ্যা মডেল লাইব্রেরী” নিবন্ধন পেয়েছে তরুণদের কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত : সাটুরিয়ায় ডব্লিউএস কমার্সের শাখা অফিস উদ্বোধন আন্দোলন ছিনতাই হবার দাবি নেপালের জেন-জি’র একের পর এক সরকার পতন, জেন-জিদের ক্ষোভে পুড়ছে বিশ্ব ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ীদের জামায়াত আমিরের শুভেচ্ছা

আন্দোলন ছিনতাই হবার দাবি নেপালের জেন-জি’র

স্পষ্টবাদী ডেস্ক / ১৭ Time View
Update : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
আন্দোলন ছিনতাই হবার দাবি নেপালের জেন-জি’র
আন্দোলন ছিনতাই হবার দাবি নেপালের জেন-জি’র

কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাওয়া নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় টহল মোতায়েন করেছে সেনাবাহিনী। দেশটির পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় পাহারা দিতে শুরু করেছে সেনারা। সেই সঙ্গে যে কোন সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে নেপাল সেনাবাহিনী।

দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ মঙ্গলবার অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজনীতিবিদদের বাড়িঘর ভাঙচুর, সরকারি ভবনে আগুন এবং সংসদে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কাঠমান্ডু ও বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন।

কিন্তু বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া জেন-জি গোষ্ঠীগুলো ধ্বংসযজ্ঞ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেয়ার পাশাপশি দাবি করছেন দেশের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তাদের আন্দোলন ‘ছিনতাই’ করে নিয়ে গেছে। কাউফিউয়ের মধ্যেই রাজধানীর কাঠমান্ডুর রাজপথে নেমেছেন কিছু তরুণ। চালাচ্ছেন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান।

বুধবার, কাঠমান্ডুর বিমানবন্দর পুনরায় খুলে দেয়া হয় এবং রাজধানী তুলনামূলকভাবে শান্ত ছিলো, কারণ বেশিরভাগ বাসিন্দা কারফিউ মেনে চলছেন। তবে জ্বলন্ত ভবন থেকে এখনও ধোঁয়া উঠছিল।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের শান্তি আলোচনায় যোগ দেয়ার আহবান জানিয়েছে। ছাত্রনেতারা জানিয়েছেন, তারা দেশের শাসন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বন্দোবস্ত পরিবর্তনের জন্য একটি দাবিমালা তৈরি করছেন। সেই সব দাবি অচিরেই নতুন নেতৃত্বের কাছে দেয়ার হবে।

দেশব্যাপী বর্তমানে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি রয়েছে এবং সেনাবাহিনী সহিংসতা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িত যে কাউকে শাস্তি দেওয়ার সতর্কতা জারি করেছে। সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।

রাজধানী জুড়ে এখন সামরিক চেকপয়েন্ট রয়েছে, যেখানে অফিসাররা যে কোনও যানবাহনের আইডি পরীক্ষা করছেন। কয়েকটি শব্দের মধ্যে একটি হলো লাউডস্পিকারের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠস্বর, যা মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলছে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ নয়। যার যার বাসায় অবস্থান করার আহবান।

সেনা টহলের মধ্যেই কিছু তরুণ রাস্তায় বেরিয়েছে, আবর্জনার পাত্র বহন করছে এবং মুখোশ পরে বিক্ষোভের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি পরিষ্কার করছে। তাদের মধ্যে ১৪ বছর বয়সী সাং লামাও রয়েছেন, যিনি বিক্ষোভে যোগ দেননি, কিন্তু তিনি আশাবাদী যে এটি নেপালে পরিবর্তন আনবে।

সাং লামা বলেন, দুর্নীতির বিষয়টি নেপালে অনেক দিন ধরেই চলছে এবং আমার মনে হয় জাতির পরিবর্তনের সময় এসেছে। আমি সত্যিই আশা করি এটি আমাদের দেশে ইতিবাচক কিছু আনতে পারে।

পরিবর্তনের আরেক সমর্থক ২৪ বছর বয়সী পরশ প্রতাপ হামাল, যিনি মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, বলেছেন, তিনি এখন রাচপথ পরিষ্কার করছেন। কারণ তাদের আন্দোলনে প্রচুর দূষণ সৃষ্টি করেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, নেপালের স্বাধীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন। তার পছন্দ মেয়র বলেন্দ্র শাহকে।

পূর্ব নেপালে বসবাসকারী ৩৬ বছর বয়সী রাকেশ নিরাউলা বলেন, এই বিপ্লবের পর মানুষ এখন আশাবাদী। আরও ভালো শাসনব্যবস্থার আশা আছে। আমরা মনে করি এটি নেতাদের জন্য নিজেদের উন্নত করার একটি শিক্ষা, যাতে দেশ উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ লাভ করতে পারে।
সামরিক মুখপাত্র রাজারাম বাসনেট বলেন, আমরা মূলত সেসব উপাদানকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়ায় আছি যারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট, আগুন লাগানো এবং বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের আন্দোলন অহিংস ছিল এবং এখনও আছে এবং শান্তিপূর্ণ নাগরিক সম্পৃক্ততার নীতিতে নিহিত। তারা আরও জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি দায়িত্বের সাথে পরিচালনা, নাগরিকদের সুরক্ষা এবং জনসাধারণের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মাঠে নামিয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছে, বুধবার থেকে আর কোনও বিক্ষোভের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি এবং প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে কারফিউ বাস্তবায়নের আহবান জানিয়েছে। পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানানোর পরেও, কিছু নেপালি বলেছেন যে বিক্ষোভের তীব্রতা চিত্রিত করতে যে সহিংসতা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তা তাদের অবাক করেছে। নিরাউলা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাস করি যে এটি হওয়া উচিত ছিল না।

ললিতপুর শহরে বসবাসকারী একজন উদ্যোক্তা প্রভাত পৌডেল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মতো সরকারি ভবন, যা আমাদের নিজস্ব জাতীয় সম্পদ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা আমাকে হতবাক করে দিয়েছে। কিন্তু অনেক বিক্ষোভকারী উদ্বিগ্ন যে, এই আন্দোলন অনুপ্রবেশকারী দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, এটি সেনাবাহিনীর দাবিরও প্রতিধ্বনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category