রাজবাড়ীর গেয়ালন্দে নুরাল পাগলের দরবার শরীফে হামলার সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে গোয়ালন্দ থানা ও ডিবি পুলিশ গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন— গোয়ালন্দ দেওয়ানপাড়া আফজাল সরদারের ছেলে শাফিন সরদার, মৃধা পাড়ার মৃত আক্কাস মৃধার ছেলে ও উজানচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মাসুদ মৃধা, উজানচরের লাল মিয়া মৃধার ছেলে ও উজানচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিরু মৃধা, দেওয়ানপাড়ার জহির উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক জনি ও ৭নং ওয়ার্ডের কাজীপাড়া কাজী আরিফের ছেলে কাজী অপু।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর ‘ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে যেতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি’র গাড়ি ভাঙচুর করে। সেই সঙ্গে পাঁচ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের দুইজনকে পিটিয়ে ও ঢিল ছুড়ে আহত করে।
এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলের বাড়ি ও দরবারের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভবন ও দরবার শরীফ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগালের লাশ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল মারা যান। এরপর তার ভক্তরা তাকে দরবারের ভেতরেই কবর দেন এবং কবরের ওপর প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট উঁচু একটি স্থাপনা তৈরি করে।
স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই স্থাপনাটির তীব্র বিরোধিতা করে, কারণ তাদের মতে, এটি মুসলমানদের কেবলা সৌদি আরবের কাবা শরিফের মতো দেখতে ছিল।
এদিকে এখন পর্যন্ত নুরাল পাগলের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।