সাঁকোর উত্তর পাশে রয়েছে শিমুলবাড়ি, রাজবাড়ি, ডিয়াবাড়ি, ঘুঘুমারী, বেগপাড়া, বালাপুকুর, মীরগঞ্জ হাট ও জলঢাকা উপজেলা। দক্ষিণ পাশে হরিশচন্দ্র পাঠ, পাঠানপাড়া, বাহালীপাড়া, রামনগর, চাঁদেরহাট, বিশমুড়ী, রামগঞ্জ, পঞ্চপুকুর ও টুপামারীসহ একাধিক গ্রামের মানুষ এই পথে চলাচল করেন।
হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শিমুলবাড়ি থেকে জেলা শহরের দূরত্ব এই পথে প্রায় ১০ কিলোমিটার। ঘুরে গেলে ২০ কিলোমিটার যেতে হয়। অনেক কৃষকের জমিও এই নদীর দুই পারে। ফসল আনা-নেওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়। গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ে।’
শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় অনেকে সেতুর প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু পরে আর খোঁজ নেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হরিশচন্দ্র পাঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘বর্ষায় তিন-চার মাস স্কুলে যেতে পারি না। এতে পড়ালেখা ও পরীক্ষার ফল খারাপ হয়। আমাদেরও একটি স্থায়ী সেতু দরকার।’
ঘুঘুমারী গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘প্রতি বন্যার সময় পানি উঠলে সাঁকো ভেঙে যায়, পরে আবার নিজেরা মেরামত করি। তবুও এটাই ভরসা। উন্নয়নের যুগে আমরা এখনও কাঠের সাঁকোর ওপর নির্ভর করছি।’
রামনগর গ্রামের আফজাজুল হক বলেন, ‘সাঁকোটি একপাশে হেলে পড়ায় ঝুঁকি বেড়েছে। এখানে সেতু হলে যোগাযোগ সহজ হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে এবং ছেলে-মেয়েরা শিক্ষায় আরও এগিয়ে যাবে।’
খুটামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষায় স্থানীয়রা নিজেরা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করেন। সেতু না থাকায় মানুষকে ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়, এতে সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হয়।’
জলঢাকা উপজেলা প্রকৌশলী মো. তারিকুজ্জামান বলেন, ‘শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের মাঝখানে চারালকাটা নদীর ওপর ১৪০ মিটার কাঠের সাঁকো আছে। সেখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’