রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় আটক বৈষম্যবিরোধী পাঁচ ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের মধ্যে সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ সংগঠক ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সেলের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ পুলিশ সংস্কার কমিশনেরও মেম্বার।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে বিষয়টি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান।
তিনি লেখেন, ‘আব্দুর রাজ্জাক নামের যে ছেলেটা গ্রেফতার হয়েছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সে পুলিশ সংস্কার কমিশনের মেম্বার। অর্থাৎ, গুরুত্বের বিচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের সে লিস্টেড ছাত্র প্রতিনিধি। বাংলাদেশে যে কালচার চলে তাতে সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কোনোভাবে যুক্ত, এই পরিচয়েই কেউ অর্থ উপার্জন করতে পারে বলে মনে করি। এখানে তার মতো ব্যক্তিকে কীভাবে স্বরাষ্ট্র বিভাগের পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সুপারিশ করলো এটা সামনে আনা প্রয়োজন। এটা খুব করে চাওয়া আমার’।
তিনি আরও লেখেন, ‘জানে আলম অপু নামক ছেলেটা আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনেক উচ্চবাচ্য করতো, অনেকটা ঔদ্ধত্যের পর্যায়ে। তার বিরুদ্ধে নিজ জেলা জয়পুরহাটে অসংখ্য অভিযোগ ইতোপূর্বে কানে এসেছে, যেহেতু রাজশাহী বিভাগীয় দায়িত্বে আমি ছিলাম। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সে সহ আরও কয়েকজন সেই হত্যাকাণ্ডের কারণ তাদের দাবির সাথে না মেলা সত্ত্বেও তারা আন্দোলন করে এবং স্বরাষ্ট্র দফতরে যাতায়াত বৃদ্ধি করে। এখানে জানে আলম অপু শুধু নয়, ওর আশেপাশে থাকা আরও দু’একজনের নামে এমন অভিযোগ আসলে অবাক হওয়ার কিছু নেই’।
বৈষম্যবিরোধী নেতা রাজ্জাক পুলিশ সংস্কার কমিশনের মেম্বার
মাহিন লেখেন, ‘সর্বশেষে ইব্রাহিম হোসেন মুন্না নামক ছেলেটা এই চাঁদাবাজিতে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই নাম আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারটির যৌক্তিকতা শতভাগ ফুরিয়ে এসেছে। ইতোপূর্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সে ঢাকা মহানগর কমিটি গুছানোতে ভূমিকা রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত কয়েকদিন আগে হওয়া নির্বাচনে সে টপ অর্গানোগ্রামের একটি পদে ইলেকশন করে এবং পরবর্তীতে তার জায়গায় সে না-কি অন্য কাউকে সিলেক্ট করেছে এই অজুহাত দিয়ে সে আর দায়িত্ব নেয়নি। এরকম অদ্ভুতুরে ঘটনা ইতোপূর্বে জীবনেও প্রত্যক্ষ করিনি আমি’।
এনসিপির এই নেতা লেখেন, ‘ইব্রাহিম হোসেন মুন্নার নামটি একেবারে সেন্ট্রালি কানেক্টেড এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলেম অপুও সেন্ট্রাল নেতা। তাদের সাথে অনেকেরই ভালো খাতির থাকা অস্বাভাবিক নয়। রিমান্ডে নিয়ে প্রকৃত কুশীলবদের বের করে আনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি ঐতিহাসিক ব্যানার। আমি ইতোপূর্বেও জানিয়েছি এই ব্যানার আর থাকার প্রয়োজন নেই, যদিও এই ব্যানার প্রতিষ্ঠা করতে আমারও ভূমিকা ছিলো’।